প্রকাশিত: Sat, Feb 3, 2024 11:38 AM
আপডেট: Thu, Jun 26, 2025 3:10 PM

[১]আগামী বাজেট হবে সংকোচনমূলক, জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৬.৯ শতাংশ

সালেহ্ বিপ্লব: [২] মূল্যস্ফীতির হার কমানো এবং আর্থিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সরকার আগামী অর্থবছরের জন্য সংকোচনমূলক বাজেট প্রণয়ন করতে যাচ্ছে। এক সরকারি নথির বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে বার্তা সংস্থা ইউএনবি। বিশ^ অর্থনীতিতে মন্দার পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রসারণমূলক বাজেটে না যাওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।  

[৩] এতে বলা হয়েছে, বাজেটের আকার ৮ লাখ ৫ হাজার কোটি টাকা হতে পারে এবং আগের অর্থবছরগুলোর তুলনায় ১০ থেকে ১২ শতাংশ কমিয়ে ব্যয় বৃদ্ধি ৮ শতাংশ নির্ধারণ করা হচ্ছে।

[৪] একইসঙ্গে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রাও ৬ দশমিক ৯ শতাংশে নামিয়ে আনা হচ্ছে, চলতি বাজেটে যা ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। সরকার প্রবৃদ্ধি অর্জনের চেয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে।

[৫] নথিটিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বিদ্যমান বাজেটে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ করার চিন্তাভাবনা করছেন নীতিনির্ধারকরা।

[৬] এছাড়া বিদ্যমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) বাজেট পুরোপুরি বাস্তবায়নযোগ্য হবে না। ফলে অন্তত ৫২ হাজার কোটি টাকা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তাই অর্থনৈতিক সংকট ও কৃচ্ছ সাধন কর্মসূচি হাতে নিয়ে আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সম্প্রসারণমূলক বাজেট দেওয়া থেকে সরে আসছে অর্থ বিভাগ।

[৭] বাজেট প্রণয়নের সঙ্গে জড়িত অর্থ বিভাগের একজন অতিরিক্ত সচিব বলেন, রাজস্ব আদায় কম, আমদানি-রপ্তানি পরিস্থিতি ভালো না হওয়ায় নতুন বাজেট হবে বেশ সংকোচনমূলক। আগামী বছরও এ অবস্থা অব্যাহত থাকতে পারে। সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

[৮] তিনি বলেন, আগামী বাজেটের আকার- মোট ব্যয় ৮ লাখ ৫ হাজার কোটি টাকা, আয় ৫ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা এবং ঘাটতি ২ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা। এক্ষেত্রে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের তুলনায় আকার বাড়ছে ৪৩ হাজার কোটি টাকা। রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়বে ৫১ হাজার ১০০ কোটি টাকা।

[৯] অর্থ বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, সাধারণত চলতি বছরের বাজেটের তুলনায় নতুন বাজেটের আকার ১০ থেকে ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। তবে এবার তা ৮ শতাংশেরও কম বাড়বে। অনেক সামঞ্জস্য করে রাজস্ব আদায়ের আকার হিসাব করা হয়েছে।

[১০] নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, রাজস্ব আদায় কমেছে, আমদানি-রপ্তানি কমছে। এসব বিষয় বিবেচনায় বিগত বছরগুলোর তুলনায় বড় বাজেট দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

[১১] সাবেক আমলা ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সম্প্রসারণমূলক বাজেট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক।

[১১.১] তিনি বলেন, বর্তমানে প্রতিটি সরবরাহে অনিশ্চয়তা রয়েছে, বিনিয়োগ আশানুরূপ সম্প্রসারিত হচ্ছে না। এ অবস্থায় ৭ শতাংশের বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন বেশ চ্যালেঞ্জিং।

[১১.২] মির্জ্জা আজিজুল বলেন, মূল্যস্ফীতি এখন ১০ শতাংশ, যা কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। তাই জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়াটাই যুক্তিযুক্ত।

[১২] এ বিষয়ে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, সময়ের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাজেট সম্প্রসারণ না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

[১২.১] তিনি বলেন, রাজস্ব আদায় বাড়াতে না পারলে বাজেটের আকার বাড়ানোয় কোনো লাভ নেই। ডলার ও রাজস্ব আদায়ে চ্যালেঞ্জ তো আছেই। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই বাজেটের আকার নির্ধারণ করতে হবে। ফলে স্বল্প প্রবৃদ্ধির বাজেট সঠিক হবে। সম্পাদনা: ইকবাল খান